অল্প অল্প প্রেমের গল্প
![অল্প অল্প প্রেমের গল্প অল্প অল্প প্রেমের গল্প](https://srijoni.co.in/wp-content/uploads/2024/02/alpo-alpo-premer-golpo-short-story-debanshu-ghosh-srijoni-for-website-1024x576.webp)
Views: 31
অল্প অল্প প্রেমের গল্প:
শৈবাল: মেঘনা তুমি এবার তোমার বাবাকে বলতে পারো আমাদের কথা। এখনতো আর আমাদের বিয়ে নিয়ে আপত্তি করার কিছু নেই। (চা খেতে খেতে কথা হচ্ছে)
মেঘনা: হ্যা আমি কালকেই সকালে বাবার সাথে কথা বলবো আর তোমাকে নিয়ে যাবো বাবার সাথে দেখা করাতে। এই শোন আমাদের বিয়ের পর না আমরা এই ভাড়া বাড়ি ছেড়ে অন্যকোনো ভালো বাড়ি ভাড়া নেবে বা দুই জন মিলে রোজগার করে একটা ছোটোখাটো ফ্লাট কিনবো,তুমি কি বলো। যাতে তোমার অফিস যেতেও সুবিধা হয়।
শৈ: কিন্তু মেঘনা, তাতে তো অনেক গুলো টাকা লেগে যাবে।
মে: তাতে কি হয়েছে। আমিও তো চাকরি করবো| দুজনে মিলে রোজগার করলে কোনও অসুবিধা হবে না।
আর যদি চাকরি না পাই এখন যেমন টিউশনি করছি সেই রকমই আরও কটা বেশি করবো, কিছু না কিছু ভাবে হয়ে যাবে।
শৈ: হ্যা, তুমি আমার পাশে থাকলে সব করতে পারবো। কিন্তু মেঘনা তোমার বাবা যদি আমায় মেনে না নেয় তবে । আমি তো কি করবো জানিনা। তবে এটা জানি তুমি যদি কখনও আমার জীবন থেকে চলে যাও তাহলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাব।
মে: তাই নাকি, কিন্তু কেন?
শৈ: গ্রাম থেকে আসা একটা অজ পাড়া গাঁয়ের ছেলেকে তুমি pray তিন বছর ধরে ঘষেমেঝে এই কলকাতা শহরের মতো করে তুলেছো|এই বিরাট শহরে যখন আমার কেউ ছিল না তখন তুমি ভগবানের মতো এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছো, আমায় শহুরে আদপ কায়দায় গড়ে তুলেছো । নিজের টিউশনির পয়সায় কম্পিউটার শিখিয়ে আজকে এই চাকরিটা পাইয়ে দিয়েছো।
মে: কি? আমি চাকরি পাইয়ে দিয়েছি। তুমি তোমার নিজের যোগ্যতায় চাকরিটা পেয়েছো, বুঝলে হাঁদারাম, ( দাঁত চেপে শৈবালের চুলটা ঘেটে দিয়ে বললো)
শৈ: কিন্তু তুমি যদি তোমার টিউশনির টাকা দিয়ে আমায় কম্পিউটার না শেখাতে, তবে আজ এই কাজটা পেতাম কি? ভগবানke অনেক অনেক ধন্যবাদ যে তিনি তোমার সাথে আমার দেখা করিয়ে দিয়েছেন । এবার শুধু মিলনটা করিয়ে দিলেই ষোলো কলা পূর্ণ হয়।
মে: (হেসে বলে) সেটাও হবে বুঝলে, কেউই আটকাতে পারবে না। (একটু ব্যস্ত হয়ে) থাক এই সব কথা, সন্ধ্যে হয়ে এল, আমি যাই, চাও শেষ। চায়ের সব বাসনগুলো ধুয়ে বাড়ি যেতে হবে। বাবা একা আছে আর টিউশানিও আছে বাড়িতে|
শৈ: (হটাৎ করে মেঘনার হাতটা ধরে বললো) মেঘনা তুমি তামায় ছেড়ে যাবেনা তো, আমার কিরকম ভয় করছে।
মে: দূরঃ পাগল। হাতটা ছাড়ো বাসনগুলো মেঝে বাড়ি ফিরতে হবে। আর ভয় পাওয়ার কি আছে আমি তো তোমার সাথেই আছি, আমি যতদিন আছি তোমার ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
শৈবাল দাশ মেদিনীপুর জেলার কেশপুরের অন্তর্গত ঝটিয়ার গ্রামে এক গরিব ঘরের ছেলে। স্কুল পাস করে কেশপুর থেকে এবং গ্রাজুয়েশন পাশ করে কেশপুরেরই সুকুমার সেনগুপ্ত মহাবিদ্যালয় থেকে। তারপর গ্রামে এক পরিচিত ব্যাক্তির সাথে কলকাতায় পারি দেয়, কাজের সন্ধনে। শৈবালের বাবা দিনমজুরের কাজ করে অনেক কষ্টে ছেলেকে মানুষ করেছেন। পরে স্কলারশিপের টাকা দিয়ে কলেজে পড়া, ছোট থেকেই শৈবাল পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই,আর তার সাথে আঁকাজোকাতেও ভালো ছিল। তাই ভালো কাজের সন্ধানে সে শহরে পাড়ি দেয়, বাড়ি লোকেরাও বাধা দেয় নি।
অভাবের সংসারে দুটো বেশি পয়সা এলে ক্ষতি কি.. যে পরিচিত ব্যক্তির সাথে কলকাতায় এসেছিল শৈবাল, তিনি তাকে আহিরীটোলার একটা খাবারের দোকানে কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু শৈবালের মন বসে না কাজে। আরো ভালো কাজের চেষ্টা করতে থাকে। সারা দিন কাজ করে রাতে শরীর আর দিতনা, তবুও নানা ধরণের বই জোগাড় করে পড়াশুনা করত শৈবাল । ছোট থেকেই ভালো ছবি আঁকতো শৈবাল. আর এই সূত্রেই পরিচয় মেঘনার সাথে, একদিন দোকানের ব্যবহার করা কাগজে ছবি এঁকেছিল শৈবাল সেই ছবিটা চোখে পরে রবীন্দ্রভারতীর আর্ট কলেজ এর প্রথম বর্ষের ছাত্রী মেঘনা দত্ত -এর। সে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারে শৈবালের কথা। শৈবালের সাথে কথা বলে জানতে পারে সব কথা, তখন থেকেই ঐ গ্রামের ছেলেটাকে ভালো লেগে যায় মেঘনার। কলেজের পর প্রায় দেখা করতো মেঘলা শৈবালের সাথে। শুধু দেখা নয়, আঁকার খুঁটিনাটি শেখাতে শুরু করে শৈবালকে, শৈবালেরও ভালো লাগতো।
দোকানের মালিকেরও কোনো সমস্যা ছিল না তাতে বরং তিনিও উৎসাহ দিতেন, ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে, সপ্তাহেr কয়েকদিন থেকে সপ্তাহেr প্রতিদিন ওরা দেখা করে। এই ভাবে কেটে যায় প্রায় গোটা একটা বছর। তারপর মেঘলা শৈবালকে কম্পিউটারে ভর্তি করে দেয়, Graphic Design Course-এ। তার সাথে দোকানের কাজ ও সামলাতে থাকে। প্রায় ৮ থেকে ৯ মাসের কঠোর পরিশ্রম এর পর সল্টলেক Sector 5 Graphic designer- এর চাকরি পায়।
ভালো কাজের সুবাধে ৬ মাসের মাথায় বড় MNC কম্পানিতে কাজের সুযোগও পেয়ে যায়, ততদিনে শৈবাল ও মেঘনার প্রেম জমে উঠেছে .দুজন দুজনকেই খুব ভালোবাসে, প্রথম যেদিন শৈবাল কলকাতায় এসেছিল আর দোকানের মালিকের সুপারিশ যে মাথা গোজার জায়গা পেয়েছিল সেই ঘরের ভিতরেই আজকের কথোপকথন হচ্ছিল শৈবাল আর মেঘনার, কাজ পাওয়ার পর দোকানের কাজ ছেড়ে দিলেও এই বাড়িটা ছাড়েনি।
মেঘনার বাড়ি হাতিবাগানে | মা নেই, বাবার কাছেই মানুষ। বাবার ছোট একটা দোকান আছে সেই কারণে খুব অল্প বয়সেই নিজেr পড়াশুনার ভার নিজের কাঁধেই তুলে নেয় মেঘনা| খুব ভালো আকঁতে পারতো বলে তার থেকে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আঁকা শেখিয়ে আর্নিং করা শুরু করে। এই ভাবে মাধ্যমিক ও পরে উচ্চ মধ্যমিক, তার পর আর্ট কলেজ, অনেক Exhibition থেকে নগদ পুরস্কার, Tuition ও Scholarship সব কিছু মিলিয়ে সে নিজের খরচ নিজেই চালাত। কলেজের তিনটে বছর শেষ। এবার Carrier-এর সাথে সংসার এর দায়িত্বও নিতে হবে। পরের দিন সকালে মেঘনা তার বাবাকে শৈবালের সম্পর্কে সব কথা বলে,সব শুনে শান্ত মেজাজের ভদ্রলোক শৈবালকে বাড়িতে ডাকতে বলে।
শ্রী শ্রী প্রজাপতয়ে নমঃ
সবিনয় নিবেদন
মহাশয়/মহাশয়া,
আগামী ১৮ই ফাল্গুন, (ইং ২ রা মার্চ) বুধবার, শিশিরস্নাত দুর্বাঘাসে অপরূপ প্রভাতী সূর্যরশ্মির শুভ্র আলোকোজ্জ্বল সমারোহ, ফাল্গুনী হাওয়ার মিঠে রোদের মদিরতায় বসন্তকালীন রঙ বাহারি পুষ্পের বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি, দৃষ্টিনন্দন নীলাকাশে স্বল্পায়ু দিবসের রৌদ্র ছায়ায় খেলতে খেলতে সূর্যদেব যখন পৃথিবীকে শুভরাত্রি জানিয়ে বিদায় নেবে, সেই শুভরাত্রির শুভলগ্নে রজনীগন্ধার স্নিগ্ধ সুবাসে প্রজাপতি- ঋষিকে সাক্ষী রেখে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের পাশাপাশি শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও সানাইয়ের সুরে দুটি সবুজ মন ‘মেঘনা ও শৈবাল ‘-এর জীবন মিলনের অমৃতবীণা ঝংকৃত হবে।
প্রিয় শুভার্থী,
এই উপলক্ষে আলোকজ্জ্বল মাঙ্গলিক শুভঅনুষ্ঠানে আন্তরিক আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা নবপ্রান দুটির দাম্পত্য জীবন পথের পাথেয় হোক। আপনার/আপনাদের উপস্থিতি ও আতিথেয়তা গ্রহণের মাধ্যমে এই আনন্দময় প্রীতিভোজ হৃদ্য হয়ে উঠুক; এই কামনায় রইল আন্তর – আমন্ত্রণ।
পত্রদ্বারা নিমন্ত্রণের ত্রুটি মার্জনীয় ।
১৮ই ফাল্গুন
দেবকুমার দত্ত ।
Audio Story Starts From Here:
Story Info | Name |
---|---|
Writer | Debanshu Ghosh |
Intro & Ending | Debanshu Ghosh |
Kathak | Olivia Das |
Characters | Name |
---|---|
শৈবাল | Debanshu Ghosh |
মেঘনা | Susmita Das Ghosh |
দেব কুমার দত্ত | Akash Debnath |
Find us on Facebook – click here