ভালোবাসার দাম
Views: 24
ভালোবাসার দাম:
বিশ্বাস ভালো কিন্তু অন্ধ বিশ্বাস ভালো নয়। সংস্কার ভালো কিন্তু কুসংস্কার ভালো নয়। মানুষ সেটা বোঝে না। যখন অন্ধ বিশ্বাস আর কুসংস্কারে মন আচ্ছন্ন হয়ে ওঠে,তখন অন্য কিছু জানার বা বোঝার ক্ষমতা থাকেনা। তখন হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে যায় মানুষ।
পশু পশুর মাংস খায় কারণ তারা পশু। এটাই ওদের খাদ্য,জীবন ধারণের রীতি। কিন্তু মানুষ? তারা তো উন্নত প্রাণী। তারা সমাজ বদ্ধ জীব। তাদের একে অপরকে দরকার পড়ে তবু একে অপরকে অন্ধ বিশ্বাসের জালে জড়িয়ে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ঈশ্বর ‘একম অদ্বিতীয়ম।’ তিনি মঙ্গলময়, এতটুকু পিঁপড়ের থেকে মানুষ পর্যন্ত সবার মঙ্গল সাধন করেন। সেই ঈশ্বরকে নানান দেবদেবীর মধ্যে বসিয়ে মানুষের মনের মধ্যে কুসংস্কারের বীজ বপন করে অন্ধ বিশ্বাসের দিকে ঢেলে দেয় ঐ সাধু সন্ত আর তান্ত্রিক নামক এক ধরণের নরখাদক। সরল মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে মিথ্যা আশ্বাসই বলুন আর অন্ধ বিশ্বাসই বলুন যথা সর্বস্ব লুট করে জীবন সংশয় দুর্বিসহ করে তোলে। প্রকৃত সাধু সন্ত, মনীষী, তান্ত্রিক মানুষের উপকার করেন শয়তানকে শাস্তি দেন। আর ভন্ড, প্রতারক, লোভী, স্বার্থপর, নরখাদক মানুষ, যারা শিকার করে মানুষকে, তারা সমাজে মানুষ নামে কলঙ্ক। এরা সারা দুনিয়ার মধ্যে পোকার মতো কিলবিল করছে। এদেরকে মানুষ কবে চিনবে?
আমার এদের প্র্রতি এতো ক্ষোভের কারণ কি?জানতে চান?
তবে আপনাদের একটা ঘটনা বলি। আমাদের এক আত্মীয়র মধ্যে এমন এক ঘটনা ঘটে যে আমার মনকে খুব নড়িয়ে দিয়েছিল। প্রচন্ড দুঃখ ও কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু করার কিছু ছিল না। যখন জানলাম তখন সব শেষ।
ছেলেটি আমায় কাকিমা বলতো। ওই নাম ধরুন শুভ। বড় ভালোবাসতাম ওকে। ছোট বেলায় বরো ভালো ছিল দেখতে বলুন আর স্বভাবেই বলুন। ১৪/১৫ বছর বয়সে মা মারা যাবার পর একটু বিগড়ে যায়, তারপর আবার বাবার দ্বিতীয় বিয়ে, তাতে আরো নষ্ট। পড়াশোনাও ছেড়ে দেয়। বাজে ছেলেদের সাথে মিশে বিপথে যায়। ভালো-খারাপ নানা পথে গিয়ে রোজগারের ধান্দা করে। ২০/২১বছর বয়সে প্রোমোটারীর ব্যবসা শুরু করে। তারপর একদিন একটি মেয়েকে ভালোবেসে মন্দির থেকে বিয়ে করে নিয়ে আসে বাড়িতে, মেয়েটির বয়স মাত্র ১৬ বছর। মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। দেখতে শুনতে বেশ ভালো,ব্যবহারে স্বভাবে আরো ভালো; মেয়েটির নাম মিমি। কিন্তু মেয়ের বাবা মানবে কেন? প্রথমে ৪-৫ জন লোক নিয়ে এসে তড়পে গেলো । মেয়েকে নিয়ে যাবার জন্য অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু মেয়েটি গেলো না… শেষে জোর করে ধরে বেঁধে নিয়ে গেলো মেয়ের বাবা। তারপর দিন শুভ ওর বাবাকে জোর করতে লাগলো;মিমিকে ফেরত আনার জন্য। কিন্তু শুভর বাবা নিরুপায়। আইন বলে তো কিছু আছে। শেষে শুভ গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে গেলো,কিন্তু পারলোনা । সঙ্গে সঙ্গে সবাই দেখে ফেলে গায়ে জল ঢেলে হাসপাতালে নিয়ে গেল। দিন ১৫ কাটিয়ে বাড়ি এলো। সপ্তাহখানেক সব চুপচাপ। হটাৎ একদিন শুনি শুভ আর মিমি পালিয়েছে। কোথায় গেলো দুজনে কোনো খোঁজ খবর নেই। মাসখানেক পরে ফিরলো দুজন। কোথায় গিয়েছিলো? না কামাখ্যা মন্দিরে। ওখানেই ছিল, এক তান্ত্রিকের আশ্রয়ে। ওরাই আবার ওদের বিয়ে দিয়েছে মন্দিরে। মিমির বাবা এসে মেয়ের মাথার সিঁদুর মুছে পুলিশকে সাক্ষী রেখে নিয়ে গেলো।
কিন্তু হায়! মাসখানেক পরে দেখা গেলো মেয়ে প্রেগন্যান্ট। কি করে মেয়ের বাবা? সেই মেয়েকে আবার বিয়ে দিয়ে, শুভর সাথে ফেরত পাঠালো। কিছুদিনপর মাধ্যমিকের ফল বেরোলো। মিমি ভালোভাবে পাশ করেছে। আবার স্কুলে ভর্তি হলো ১১ ক্লাসে। মাস কয়েক স্কুলে যেতে না যেতেই বন্ধ হল স্কুল যাওয়া। মিমির বাচ্ছা হবে। ওই অবস্থায় স্কুলে না যাওয়াই ভালো। কিছু মাস পর মিমির ছেলে হলো।
তারপর থেকেই শুভ চঞ্চল হয়ে চারিদিকে নানা কাজের সন্ধানে ঘুরতে লাগলো। না সোজাপথে নয় বেঁকা পথে। পরিচিতদের বাড়ি গিয়ে যার দেখে ছোট মেয়ে আছে তাদের বলে,
-” আমায় তোমার মেয়েকে দেবে, আমি মানুষ করবো। আমার একটা মেয়ের দরকার।”
কেউ বিরক্ত হয়, কেউ রাগ করে, কেউ আবার ঠাট্টা করে বলে,
-” আরে তোর একটা ছেলে আছে, আর একটা মেয়ে তৈরী কর।”
কিন্তু কারোর কথা ও গায়ে মাখে না। একদিন আমি মিমিকে জিজ্ঞাসা করলাম,
-” হ্যাঁ রে মিমি,শুভ এতো মেয়ে মেয়ে করছে কেন?”
হাসতে হাসতে মিমি বলে,
-” আর বোলো না কাকিমা। কামাক্ষা মন্দিরে ওই তান্ত্রিক ওকে বলেছে ওর নাকি মেয়ে ভাগ্য খুব ভালো। ওর মেয়ে হলে, ও কোটিপতি হবে। ওর প্রচুর টাকা হবে। সেইজন্য আর কি।”
ছেলের পাঁচ বছর হতে না হতেই বিরাট রোগ ধরা পড়লো; থ্যালাসেমিয়া। ব্যাস ছেলের পাঁচ বছর পূর্ণ হতেই, সবাই আবার কামাক্ষা গেলো প্লেনে। ফিরে আসতেই আমায় একটা ছবি দেখিয়ে শুভ বললো,
-” এই দেখো কাকিমা আমার গুরুর ছবি। আমরা দুজনে দীক্ষা নিলাম। গুরুদেব ছেলেকে ঠিক সুস্থ করে দেবে।”
আমি অবাক হয়ে গেলাম; বললাম,
-“সে কিরে এই বয়সে। তাছাড়া তুই ওখানে দীক্ষা নিলি কেন? আমাদের তো কৃষ্ণ দীক্ষা। তুই কালী দীক্ষা নিলি? আর ছেলেকে নিয়ে ছেলেখেলা করছিস কেন?”
-” ওসব ছাড়ো, আমি উপকার পেয়েছি। আর গুরুদেব বলেছেন যদি মেয়ে হয়, আমার কোটি টাকা হবে । দেখো আমার মেয়ে হবে। উনি ওখানে যজ্ঞ করছেন। আমি এখান থেকে টাকা পাঠিয়ে দিলেই ব্যাস; ছেলেও সুস্থ থাকবে।”
আমি অনেক বোঝালাম। শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে বললাম,
-” দেখ শুভ। এই সব যাগযজ্ঞতে অনেক খরচ। ওরা তান্ত্রিক। ওদের কথা মতো না চললে, ক্ষতি করে দেবে। সাবধান।”
কিন্তু কে কার কথা শোনে। ওর তখন মাথার মধ্যে আছে, ওর একটা মেয়ে চাই। ওর নিজের মেয়ে হলে তখন ওর কোটি কোটি টাকা হবে। এদিকে ওর সৎ মাও ওর বাবাকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বোধহয় ছেলের অত্যাচারে। বাবারও বয়স হয়েছে। হটাৎ একদিন শুনলাম ছেলের খুব বাড়াবাড়ি অবস্থা, কলকাতায় শিশু হাসপাতালে দিয়েছে। জ্বর কমছে না;আমার কর্তা একদিন দেখতেও গেল |তারপর শুনলাম ছেলে ভালো আছে |
বেশ মাসখানেক ভালোই কাটলো | হটাত দেখলাম একতলা বাড়ি দোতালা হল ,ওপরের ঘরে এসি বসলো; এত টাকা আসছে কোথা থেকে?
একদিন মিমি এল, শরীরটা বেশ খারাপ দেখলাম বললাম-“ কিরে কি হয়েছে বল না?”
মেয়েটা বেশ চাপা ম্লান হেসে বলল-“ না কাকীমা, সেইরকম কিছু নয়| এমনি এলাম আমি চাকরি করব বলে| একটা ব্যাংকের ফর্ম ফিলাপ করতে এসেছি দাদার কাছে।“
আমি একটু স্নেহের সঙ্গে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম-“ হ্যাঁ রে, ছেলে কেমন আছে? শুভর খবর কি?”
হেসে মিমি বলল-“ ছেলে ভালো আছে কাকিমা; আর ও এখন আমার বাবার কাছে কাজ করছে, ভালই আছে |
আমি বললাম-“ তোর শ্বশুরমশাই কেমন আছে?”
মিমি বললো-“ বাবা তো গত মাসে রিটায়ার করেছে, বাবার ব্যাংকেই তো চাকরির জন্য দরখাস্ত করছি | প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তুলে দোতলা হল|”
” তা বেশ, তা আমি জিজ্ঞাসা করছি শুভর মাথা থেকে কামাখ্যার তান্ত্রিক গেছে না আছে ?”
-“তুমি যে কি বলো কাকিমা, উনি আমাদের গুরু। উনি যা বলেন সব সত্যি হয়।“
বুঝলাম। ওর ও মাথা বিগড়ে দিয়েছে। আরও মাস দুয়েক পরে পাড়ার একজনের কাছে শুনলাম ওরা বাবার পেনশন বিক্রি করে মোটা টাকা পেয়েছে। এত্ত হয়? আমার কর্তা বললেন, আজকাল সব হয়| বুঝতেই পারলাম, সব তান্ত্রিকই খাচ্ছে| কিন্তু বুঝেও আমার কিছু করার নেই|
মাস ছয়েক পরে হঠাৎ শুভর বাবা এল আমার কর্তার কাছে হাজার সতেরো টাকা চাইছে| আমার বিরক্ত লাগে, আড়ালে কর্তাকে ডেকে টাকা দিতে বারণ করলাম।
পরে কর্তাকে জিজ্ঞাসা করলাম-“ কেন টাকা চাইছেন?”
কর্তা বলল-“ বাড়িতে কারেন্ট নেই CESC থেকে কেটে দিয়েছে বিল দিতে পারে নি বলে, প্রায় ১৭ হাজার টাকা বিল হয়েছে। তারই টাকা চাইছে বিল মেটাবে বলে|
অগত্যা দিতে হলো টাকা| অনেক প্রশ্ন মনে আসছে। তবুও কাউকে পাচ্ছিনা যে উত্তর দেবে | শুভ আর বেশি আসে না, মিমিও আসে না। কর্তাকে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর আসে,” তোমার কি দরকার?”
ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলে বলে-“ আমি ওসব খবর রাখি না|”
যাইহোক এইভাবে বছর দুই গেল| একদিন ভোর পাঁচটার সময় ফোন এলো কর্তার কাছে|
শুভ ফোন করেছে-“ কাকা মিমি হাসপাতালে”
—–” কোন হাসপাতালে?”
—–” ক্যালকাটা মেডিকেল” ব্যাস ফোন কেটে গেল|
কর্তা আমায় বলল ,”জানো মিমিকে কলকাতার হাসপাতালে দিয়েছে।“
আমি প্রশ্ন করলাম _”কেন কি হয়েছে ?”
—–“না কিছু বলল না তো শুভ, দেখি ওদের বাড়িতে যাই “ বলে কর্তা উঠে প্রাতকৃত সেরে বেরোতে বেরোতে ছটা বেজে গেল |
আবার ফোন—” হ্যালো ?”
শুভ বলে-“ কাকা মিমি আর নেই। “
— “হা? কি বলছিস কি ?“ কর্তা চেচিয়ে বলে |
আমি বললাম-“ কি হল গো?”
“ মিমি আর নেই?”– কর্তার গলাটা ধরে এলো|
তাড়াতাড়ি করে ওদের বাড়ি গেলাম| দেখি শুভর বাবা বাড়ির ভিতরে দালানে বসে| নাতিটা ঘরে শুয়ে| আমার কর্তা বলে “কি হয়েছিল দাদা? “
অনেক কষ্টে শুভর বাবা বলে “বৌমা সাত মাসের প্রেগনেন্ট ছিল কাল সন্ধ্যেবেলায় সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে খুব ব্লিডিং হওয়াতে হাসপাতালে নিয়ে যাই| এখানকার হাসপাতাল দেখে বলে কলকাতায় নিয়ে যেতে, ওখানে রাত একটায় পৌঁছে, সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখে বলে পেশেন্টের অবস্থা খুব খারাপ| হয় মা বাঁচবে, না হয় বাচ্চা;
একটু থেমে শুভর বাবা বললেন “ শুভ বললো আমার বাচ্চা চাই” ,বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন শুভর বাবা
আমি বললাম” মিমি মা হতে যাচ্ছিল, ডাক্তার যে ওকে বলেছিল দ্বিতীয়বার মিমি মা হলে ওর জীবন সংশয় হবে।“ ওদের বাড়িতে মিমির বাপের বাড়ি থেকে একটা কাজের লোক রেখেছিল| কাজের বউটা ওদের বাড়িতে কাজ করছে প্রায় তিন বছর|
সে আমায় চুপিচুপি ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল,” মেয়েটাকে মেরেছে ওর স্বামী”
“ কি বলছ যাতা!! ওরা ভালোবেসে বিয়ে করেছে “আমি বললাম |
কাজের বউ তারপর যা বলল শুনে আমার মাথা ঝিমঝিম করতে ,আমি বসে পড়েছিলাম |
আমার স্বামী আমার অবস্থা দেখে আমায় বাড়ি নিয়ে এলো |বলল-“ কি হয়েছিল তোমার তুমি ওমন ভাবে বসে পড়লে, মাথা ঘুরছিল?”
আমি তখন সব কথা কর্তাকে বললাম। “আমার বাড়িতে মিমি আসে বছর আড়াই আগে তখন মিমি দ্বিতীয়বার প্রেগন্যান্ট ছিল, আমি দেখে বুঝতে পেরেছিলাম ওর শরীর ভালো নেই | কিন্তু স্বীকার করলো না |তখন শুভ বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে অন্য কোন বেআইনি ডাক্তার দেখিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করে ছেলে না মেয়ের লিঙ্গ জানে যে ওটা ছেলে| তখন ওই বাচ্চাটা নষ্ট করে দেয় | তারপর ছমাস পর মিমি আবার প্রেগনেন্ট হলে আলট্রাসনোগ্রাফি করে জানে ওটাও ছেলে। ওটা কেউ নষ্ট করে | এবার শেষবারে জানে এটা মেয়ে কিন্তু মিমির শরীর আর নিতে পারেনি ….”বলে কাঁদতে থাকি আমি।
সেদিন বিকালে মৃতদেহ আসে ওদের বাড়িতে। গেলাম শেষ দেখা দেখতে, শুধু ওর মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দিয়ে বললাম তুই শুধু ভালোবাসার দাম দিয়ে গেলি মা আর ওই লোভী শয়তানটা বুঝলো না তোকে| পরে জানতে পারি বাড়িটা ব্যাংকে মডগেজ রেখে বেশ কয়েক লাখ টাকা নিয়েছিল ওরা | মেয়েটাকে মানে বাচ্চাটাকে ডাক্তার বাঁচিয়ে তুলেছে| বাড়ির মডগেজ ছাড়াতে না পেরে বাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে। আর ওরা অন্য কোথায় ভাড়া চলে গেছে |বাচ্চাটা বেঁচে আছে আজ তিন বছর হলো মার মৃত্যু দিন আর ওর জন্মদিন পালছে কিনা কে জানে, ওই তান্ত্রিক গুরু আছে কিনা তাও জানিনা তবে কোটিপতি যে হয়নি, এটা জানি|
Audio Story Starts From Here:
Story Info | Name |
---|---|
Writer | Kaberi Ghosh |
Intro & Ending | Debanshu Ghosh |
Kathak | Priyanka Dutta |
Characters | Name |
---|---|
Suvo | Joydeep Lahiri |
Mimi | Priyanka Dutta |
Karta babu | Debanshu Ghosh |
Others Voice | Debanshu Ghosh, Priyanka Dutta, Joydeep Lahiri |
Find us on Facebook – click here