Visits: 4

মুনলাইট ভিলা:

পাঁচ বন্ধু একই পাড়ায় থাকে,একই সাথে বড় হয়েছে; ওদের  স্কুল থেকে আজ কলেজ পর্যন্ত গেছে। কল্যাগের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। কল্যাগের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। এবার ওরা পাঁচজন কোন পথে যাবে;সেটা ওদের ওপর নির্ভর করছে। পাড়ার সবাই পঞ্চপান্ডব বলে। এইবার পঞ্চপান্ডবের পরিচয় দিই।  গোরা আর সূর্যর অবস্থা বেশ ভালো, বাড়িতে বাবা,দাদা , মা তিনজনেই রোজগেরে। গোড়ার একটা বোন আছে. কিন্তু সূর্যের বোন নেই; দিদির মতন বৌদিদি আছে। আর বাকি সজল, কাজল দুই ভাই; খুড়তুতো আর জ্যাঠতুতো। তবে দুজনের মধ্যে খুব ভাব।একে অপরকে ছেড়ে কোনো কাজ করে না; অবস্থা ভালো। কাজলের দিদি আছে আর সজলের বোন আছে। আর বাকি রইলো তাপস। সে এই পাড়াতে ভাড়া থাকে তবে অনেক দিন আছে। ওদের নতুন বাড়ি হচ্ছে পাশের পাড়ায়। তাপসের বাবা নেই,মা আছে ব্যাঙ্কে কাজ করেন। তাপস একটা;ভাই বা বোন নেই।

কলেজ শেষ হতেই সবার মাথায় ঢুকলো ঘুরতে যাবে। কিন্তু কোথায়? তাপস বুদ্ধি দিয়ে বললো,
-“এমন জায়গায় যাবো যেখানে থাকা কাওয়ার টাকা লাগবে না।”
সজল আর সূর্য বলেছে,
-“এই না; খাওয়াটা আমাদের পয়সায় খাবো, অন্যের পয়সায় নয়।”
-“কিন্তু কোথায়? চিরাচরিত ওই পাহাড় সমুদ্র বা অরণ্যে নয়। তবে কোথায়?” গোরা বললো।
গোরা আর সূর্য বললো,
-“বেশ ভৌতিক পরিবেশে বা কোনো ভূত বাংলোয়।”
সজল তাড়াতাড়ি বললো,
-“এই না না আমার একটু ভূতের ভয় আছে।”
কাজল বললো,
“তবে অতো গোয়েন্দার বই পড়িস কেন?অতো যদি ভয় তো?”

সবাই মিলে আলোচনা হচ্ছিলো তাপসদের নতুন বাড়ির ছাদে। ইনকমপ্লিট হয়ে পরে আছে বাড়িটা। ওর বাবা মারা যাবার পর আর মিস্ত্রি লাগেনি।   তবে তাপসের মা বলেছেন একবছর হলে,আবার মিস্ত্রি লাগবে। যাই হোক এখন এই বাড়িটা ওদের আড্ডাখানা হয়েছে। তাপস অনেকক্ষন চুপ করে বসে থাকাটা লক্ষ্য করলো সূর্য। সূর্য দলের মধ্যে একটু বেশি বুদ্ধিমান ও সাহসী। সূর্য বললো,

-“কিরে তাপস চুপ করে আছিস যে ? কিছু বল?” 

-” নারে ভাবছি। আমার মায়ের এক মামাতো ভাই থাকেন সাঁতরাগাছিতে। তার একটা বাগানবাড়ি আছে। ছোটপবেলায় অনেকবার গেছি। কিন্তু কোথায় তাই ভাবছি। ” তাপস বললো।
গোরা বললো,

-“মানে সম্পর্কে তোর মামা। কিন্তু তুই আমার তো বলিসনি?”

তাপস বললো,
-“হ্যাঁ, মায়ের থেকে বড়ো।  আর্মিতে থাকতেন। অবিবাহিত। সংসারে কেউ নেই উনি একা। খুব ছোটবেলায় গেছি। অনেকদিন হলো যাইও না, যোগাযোগ নেই। বাবা আজ দুবছর হলো মারা গেছেন। বাবার মৃত্যুর খবরও পেয়েছেন কিনা জানি না। উনি খবর পেলে নিশ্চই আসতেন। বাবার সাথে খুব ভাব ছিল।”
সজল বলে উঠলো,
-“দূর বাবা। অটো কি দরকার। তুই তোর মাকে জিজ্ঞাসা করে তারপর চল একদিন যাই সবাই মিলে। “
কাজল বললো,
-” এখন নিশ্চই রিটায়ার করেছেন অতএব বাড়িতেই থাকবেন।”
তাপস বললো,
-“ঠিক বলেছিস আজি মাকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেবো। তারপর কাল কিংবা পরশু যাবো। “
সূর্য  উঠে পরে বলে,

-” চল সন্ধ্যে হয়ে গেছে। তোর মা বোধহয় এতক্ষনে এসে গেছে। আমিই বলছি। তুই বললে তোকে অটো পাত্তা দেবে না। বলবেন যে তোর যাওয়া হবে না।”

তাপসও উঠে পরে বলে,
ঠিক বলেছিস।তাহলে চল সবাই।
সবাই উঠে তাপসদের বাড়িতে গেলো ডাকতে।  তাপসদের বাড়িতে সারা দিন রাতের একজন লোক থাকে, হাবুদা। বয়স্ক মানুষ,তিনকূলে কেউ নেই; সেই তাপসের বাবার আমল থেকে আছে। খুব ভালো মানুষ। হাবুদাই দরজা খুলে দিলো। ওদের দেখে বলে,
-“বৌদিমনি গো পঞ্চপান্ডব এসেছে। “
বাইরে বেরিয়ে আসেন তাপসের মা সুষমা দেবী। হাস্তে হাস্তে বলেন,
-“কি ব্যাপার কি মতলবে?”
সূর্য- গোরা একসাথে বললো,
-“হ্যাঁ কাকিমা একটা মতলব আছে, ঠিকই ধরেছেন।”
ঘরে বসলো সবাই। সুষমা দেবী হাবুদা কে বললেন,
-” হাবুদা জলখাবার। ওরা এমনি এমনি আসেনি।” 

হাবু দাও হাসতে হাসতে বললো,
-“হ্যাঁ হ্যাঁ করছি।”
সুষমা দেবী ওদের মতলব শুনে একটু ভাবলো, তারপর বললেন,
-“হ্যাঁ ওনার বাংলো আছে পুরীতে।”
সবাই চিৎকার কর ওঠে,
-” আরিব্বাস!দারুন। “
সুষমা দেবী আবার বলেন,
-“অনেকদিন ওনার কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি। আর উনিও নেন নি। আমি ঠিক জানিনা উনি কোথায় আছে? কেমন আছেন?আদৌ ওনার বাগানবাড়ি এখনো আছে কিনা?”
তাপস বায়না ধরে বলল,
-” না মা ওরকম বোলো না। সব ঠিক আছে?”
গোরা বললো,
-“উনি যেখানে থাকেন, তুমি সেখানকার ঠিকানা দাও। আমরা গিয়ে খোঁজ করি যদি এখানো থাকেন, দেখা করে জেনে নেবো। না হয় ফিরে আসবো। ব্যাস।”
কাজল বললো,
-” আরে বাবা একটা ফোন করে নাও তাহলেই হয়ে যাবে।”
সুষমা দেবী বললেন,
-“এতদিনে ওনার ফোন নম্বর একই আছে না পাল্টেছেন কিনা সেটা তো জানি না।”
তাপস বললো,
-” দূর অটো সময় নেই। তুমি ঠিকানাটা দাও;কালকে সবাই যাবো জানতে ব্যাস।”
সুষমা দেবী আর আপত্তি করলো না। সুজন মামার ঠিকানা পেয়ে গেলো তাপসরা অর্থাৎ পঞ্চপান্ডব।

সাঁত্রাগাছিতে বাড়ি। ট্রেনে করে গিয়ে স্টেশনে নেমে টোটো বা অটোকে জিজ্ঞাসা করলেই হবে যে কর্নেল সুজন বোসের বাড়ি কোথায় সবাই বলে দেবে।

ঠিক তাই। অটো করে ঝুলতে ঝুলতে এসে সবাই নামলো একটা বাড়ির সামনে। গোরা গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ে। কলিং বেল বাজায়, না কোনো সারা নেই। কড়া নাড়া বন্ধ করে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সবাই, কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। চলে যাবে না আবার কড়া নাড়বে। এইসব ভাবতে ভাবতে দরজা খুলে গেলো। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে একটা দশ- বারো বছরের ছেলে। এতজনকে দেখে সে ঘাবড়ে গেছে। প্রথমে গোরা বললো,
-“কর্নেল স্যার আছেন?”
ছেলেটি মিনিট দুয়েক চুপ করে থেকে বলে,
-“দাদু নেই।”
সূর্য জিজ্ঞেস করলো,
-“কোথায় গেছেন?”
ছেলেটি আবার চুপ করে থেকে বলে,
-“তিন চারদিন আগে চলে গেছে। “
বলে দড়াম করে দরজাটা বন্ধ করে দেয়। পঞ্চপান্ডব কিছুক্ষন চুপ করে থেকে কাজল বলে,
-” দেখ কেমন করে বললো, যেন মারা গেছেন। চল চল চলে যাই। তাপস ফোন করে দেখ তিনি কোথায় গেছেন?”
তাপস বললো,
-“আমি আগেই ফোন করেছি। স্টেশনে নেমে। নট রিচেবল বললো। “
সজল বললো,
-” তাহলে আর কি করা যাবে চলো ফিরে যাই।”
সূর্য বললো,
-” চল হেটে যাই। “
সবাই ফিরে চললো মন খারাপ করে। খানিক যাবার পর হাটাৎ তাপস এগিয়ে যায়। সবাই দেখতে পেলো বয়স্ক এক ভদ্রলোক আসছেন। পরনে ঢোলা পাজামা পাঞ্জাবী, চোখে চশমা, মাথায় সাদা চুল। তিনিও এগিয়ে এসে তাপসকে দেখে বললেন,
-” তোমায় খুব চেনা চেনা লাগছে।”
তাপস বললো,
-“আমারও! আপনি কি সুজন মামা?”
হা হা করে হেসে ভদ্রলোক বললেন,
-” ঠিক ধরেছো। তোমরা কি আমার বাড়ি গিয়েছিলে?”
গোড়া বললো,
-” নমস্কার মামাবাবু। আমরা তাপসের বন্ধু। সবাই এক পারে থাকি। আপনার কাছে এসে ছিলাম একটু দরকার।”
-” ও তাই নাকি! বেশ, তাহলে চলো স্টেশনে। “
-” কেন মামাবাবু। আপনার বইতে চলুন না।” সূর্য বললো।
ভদ্রলোক একটু হেসে বলেন,
” No my  boy , বাড়ি আমার ভালো লাগে না। সারা ইবন বাইরে বাইরে থেকে মনটা ঘরমুখো হয়ে গেছে। তোমাদের সাথে নতুন আলাপ হবে, চলো কোনো গাছতলায় গিয়ে বসি।” বলেই মামাবাবু পিছনে ঘুরে হাঁটতে লাহলেন। অগত্যা ওরাও চললো, খানিক গিয়ে গাছপালা ঘেরা মাঝে এক গাছতলায় গিয়ে বসলেন। বললেন,
-” এসো বসি।”
সবাই গিয়ে গাছতলায় বসলো। তখন মামাবাবু সজলকে বললেন,
-“My boy তোমার নাম কি?”
-“আমার নাম সজল। কেন বলুন তো?”
-” এই একটু গেলেই একটা মিষ্টির দোকান পড়বে। kindly তুমি যদি গিয়ে মিষ্টি আর জল কিনে আন্তে, তাহলে তোমাদের একটু মিষ্টিমুখ করতাম; আমি তো বুড়ো মানুষ….।”
-” না না মামাবাবু আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। আমরা ভাত খেয়ে বেড়িয়েছি।” হটাৎ তাপস বলে ওঠে।
-” আমরা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবো। শুধু আপনার কাছে ঠিকানা নেবার জন্য এসেছি।”
সুজন বাবু ভ্রূ খুচকে বলেন,
-” ঠিকানা? কার ঠিকানা! কিসের ঠিকানা?”
তাপস তখন বিস্তারিত ভাবে তাদের প্লানের কথা বলে। তখন সুজন বাবু বললেন,
-” আমার পুরীতে বাগানবাড়ি।….” বলে থেমে যান। চুপ করে বসে কি যেন ভাবেন।”

কাজল বলল,
-” কি হলো মামাবাবু? বাগানবাড়ি নেই?”
চমকে উঠে সুজনবাবু বলেন,
-“আরে না না তা নয়। “
-” তবে?” তাপস প্রশ্ন করে।
-” আজ তিন বছর হলো ও বাড়ির খবর আমি জানি না।” চিন্তিত ভাবে বলেন সুজন বাবু।
সমস্বরে সবাই বলে ওঠে,
-“মানে?”
-” না না হতাশ হোয়ো না। মানে; ওই বাগানবাড়িতে মহেশ বলে এক ব্যক্তিকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। একদিন ও আমায় জানালো, ওদের মানে ও আর ওর ছেলের থাকার জায়গা নেই। ছেলে হটাৎ বিয়ে করেছে। তাই ওই বাগানবাড়ির বাইরের ঘরে ওদের থাকতে দিই। কারণ তাহলে ওদের উপকার হয়।”
গোরা বললো,
-” ও তার মানে ওরাই গোটা বাড়ি দখল করে আছে?”
সুজন বাবু বললেন,

-” প্রথম থেকে দেখাশোনা,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য মাইনে দিতাম। বাপ্ বেটা থাকতো ওখানেই। আমরা কেউ গেলে বাজার-দোকান, রান্না- বান্না করতো।  কারণ আমার বাগানবাড়ি স্থানীয় এলাকা থেকে মাইল দুয়েক দূরে। সে কারণে হটাৎ কেউ গেলে যাতে অসুবিধা না হয়।”

-“হ্যাঁ তাতে কি হয়েছে।ওরা ওই বাড়িতে নেই এখন?” বলে সূর্য,
-“ঠিক আছে আমরা সব ব্যবস্থা করে নেবো।”
একটু হেসে বলেন,
-” না না তা নয়। বছর তিনেক আগে এখন ওর ছেলে বিয়ে করেছে শুনে আমি ওদের মেইন দেওয়া বন্ধ করে দিলাম। ওদের খবরও আর দিই না।ওরা দু-একবার আমায় ফোন করেছিল। আমি তখন লাদাখে, ওদের ফোন ধরার সময় পাইনি। তারপর ওরা আর কোনো খবর নেয়নি আর দেয়ও নি।” বলেই চুপ করে গেলেন। যেন কি ভাবছেন।
-” ঠিক আছে মামাবাবু। আমায় ফোন নম্বরটা দিন। আমরাই ফোন করে দিই যে আমরা যাচ্ছি আপনার নাম করে ; যেন একটু গুছিয়ে রাখে। আপনার আপত্তি নেই তো?” বললো তাপস।
সুজন বাবু হেসে বললেন,
-“অরে না না, তবে তোমরা কবে যেতে চাও। আর কিসে যাবে? ট্রেনে? না গাড়িতে?” গোরা বললো,
-” গাড়িতেই যাবো। ট্রেনে বড্ড ঝামেলা।  ফোন নম্বরটা দিন মামাবাবু। শুভস্য শীঘ্রম। “
হেসে মামাবাবুর কাছ থেকে ঠিকানা ও ফোন নম্বরটা নিয়ে সবাই হই  হই করে উঠে পড়লো। সুজন বাবুকে সবাই যখন প্রণাম করছে তখন সুজন বাবু বললেন,
-” কবে যাচ্ছো ?”
গোড়া বললো,
-“হয় কাল না হয় পরশু। “
সুজানবাবু তাপসের মাথায় হাত দিয়ে, সবাইকে হাত তুলে বললেন,

-“GOOD LUCK.” 

সবাই স্টেশনের দিকে পা বাড়ালো। দু- পা গিয়ে সূর্য মাথা ঘুরিয়ে দেখে মামাবাবু যেখানে বসেছিল, সেখানে তিনি নেই। অবাক হলো। এতো তাড়াতাড়ি বুড়ো মানুষটা গেলো কোথায়? যাক যে, এখঁনোনেক কাজ তাড়াতাড়ি বাড়ি তো যাই। 

পরের দিন শনিবার ভোর ৫ টার সময়, ওরা বেরিয়ে পড়লো। তার আগের রাত্রে বাগানবাড়ির ওই ভদ্রলোককে ফোন করেছিল তাপস।
-“হ্যালো! মহেশ কাকা বলছেন?”
ফোনের অপাসবথেকে ফ্যাস ফ্যাসে ধরা গলায় একজন বললো,
-” আজ্ঞে হ্যাঁ।”
তাপসের কানে যেন কেমন লাগলো গলাটা। শুনলে যেন মাথাটা ঝিম ঝিম করল। ধুর! যাওয়ার আনন্দে সব ঐরকম মনে হয়। তাপস আবার বললো,
-” আমরা সুজন মামার ভাগ্না, পঞ্চপান্ডব মানে আমরা পাঁচজন আপনাদের ওই বাগান বাড়িতে যাচ্ছি। কয়েকদিন থাকবো। একটু দয়া করে ঘরগুলো গুছিয়ে রাখবেন কাকা। আমরা কাল বিকালবেলায় পৌছাবো। আপনাদের বাগানবাড়ির নাম কি?”
ওপাশ থেকে উত্তর এলো আস্তে আস্তে,
-“মুনলাইট ভিলা “
এরপর ফোনটা কেটে গেলো।

খুঁজে খুঁজে যেতে একটু দেরি হলো। বাড়ির সামনে গাড়ি নিয়ে থামলো। সবাই নেবে দেখছে ভালো করে বাড়িটাকে। আম ,জাম , কাঁঠাল নানা রকম ফলের গাছে ঘেরা, চারপাশে পাঁচিল দেওয়া। লোহার গেট; আর গেটের পাশে লেখা মুনলাইট ভিলা। কিন্তু অন্ধকার কেন?এল নেই? ভিতরে গিয়ে দরজায় নক করলো। বেশ কিছুক্ষন পর দরজা খুললো। ওরা দেখলো লম্বা ঘোমটা দেওয়া একজন বৌ। ওর হাতে একটি হ্যারিকেন। দরজা খুলে একপাশে দাঁড়ালো। তাপস বললো,
-” মহেশ কাক আছে? আমাদের আজকে আসার কথা ছিল। “
সবাই বাড়ির মধ্যে ঢুকলো। কাজল বল্ল,
-” আলো নেই মানে ইলেকট্রিক?”
গোরা বললো,
-” কি করে থাকবে? লোকালিটি থেকে প্রায় দু এক কিলোমিটার ভিতরে। আর কোথাও বাড়ি ঘর তো দেখতে পেলাম না। কেন তোর ভয় করছে?”
কাজল আমতা আমতা করে বললো,
-” না মানে কেমন ভুতুড়ে ভুতুড়ে লাগছে। ” 

 এর মধ্যে সূর্য ঘরের বাইরে গিয়ে দেখে এলো টর্চ জ্বেলে। পাশাপাশি দুটো ঘর। ঘরের বাইরে বাথরুম। অন্যদিকে একটা ছোট ঘর, মনে হয় রান্না ঘর। বারান্দা থেকে নেমে আসছে বাগান। বাগানের মধ্যে একটা ঘর আছে মনে হচ্ছে। যাইহোক খোলা মেলা। সূর্য আবার ঘরে এসে বললো,
-“আকাশে মেঘ করেছে; বোধহয় বৃষ্টি আসবে। আচ্ছা…..।”
বলেই তাপসের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“হ্যাঁ রে রাত্রে খাওয়ার কি ব্যবস্থা হবে। আর এখানেই বা কি খাওয়া হবে? মহেশ কাকা কোথায় গেলেন?”
তাপস ডাকে মহেশ কাকাকে; দু-তিনবার ডাকার পর বৌটি এসে দাঁড়ায়; তারপর বলল,
-” আজ্ঞে বাবা নেই,একটু বেরিয়েছে। খানিক বাদে চলে আসবেন। “
তাপস বললো,
-“কিন্তু আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা কি হবে?”
বৌটি ঘোমটা দিয়ে থাকে। ঘোমটা সরায় না। আস্তে আস্তে বললো,
-” সব ব্যবস্থ্যা করে দিয়েছে গো। এখন একটু মুড়ি আর নারকেল খান। রাত্রে মাংসের ঝোল আর ভাত। “
সজল বললো,
-“ব্রাভো। আজ ওই দিয়ে চালায়,কাল দেখা যাবে।”
বৌটি চলে যায় ,যাবার আগে ঘরে দুটি বড়ো বড়ো মোমবাতি দিয়ে যায়।
গোরা বললো,
-” ও ঘরে কে শুবি আর এ ঘরেই বা কে শুবি?”
কাজল তাড়াতাড়ি বললো,
-” না না ও ঘরে কাউকে শুতে হবে না। এই ঘরে এই এতো বড়ো খাটে সবার কুলিয়ে যাবে। না হয় সূর্যদা ওই ইজিচেয়ারে শোবে। সবাই হো হো করে হেসে ওঠে। সূর্য বললো,
-” ঠিক আছে তাই হবে, অন্ধকারে যে তোর ভয় লাগছে বুঝতে পেরেছি।”
একটু পরেই নারকেল আর চিনি দিয়ে মুড়ি মাখা এসে গেলো। তাপস বাইরে গিয়ে মাকে পৌঁছানোর খবর দিচ্ছে। হটাৎ চোখ গেলো কে যেন বাগানে পায়চারি  করছে। মুড়ি দিয়ে যাবার সময় সূর্য ডাকলো,
-“এই যে শুনুন?”
ওর কথা  শেষ না হতেই তাপস বললো,
-” আচ্ছা, বাগানে কে হাটছিলো অন্ধকারে?”
বৌটি বললো,
-” আমার স্বামী। “
সূর্য বললো,
-” ওনাকে ডাকুন না গল্প করি। “
-” আজ্ঞে না ওর অন্য কাজ আছে। আচ্ছা আমি যাই। “
 গোরা বললো,
-“আচ্ছা আপনাকে কি বউদিদি বলবো না বোন বলবো। আপনি তো আমাদের নামটা বললেন না। দরকার পড়লে কি বলে ডাকবো?”
-“আমার নাম লায়লা। “
খুব আস্তে আস্তে বললো,
-” আমায় লায়লা বোন বলেই ডাকুন। ” কথাটা বলেই ধীর পায়ে চলে যায়।

সবাই চুপ হয়ে যায়। মহেশ কাকা তো বাঙালী তবেঅর বৌমা কি…? আর কিছু ভাবার সময় পায়না। সজল চেঁচিয়ে ওঠে,
-” আরে বাপস  কি দারুন লাগছে রে নারকেল মুড়ি খেতে। আমি কোনোদিন খাইনি। “
গোরা আর সূর্যও বললো,
-” সত্যি আমরাও খাইনি।”
তাপস বললো,
-“হুঁ বাবা আমি খেয়েছি। আমার বাবা খুব ভালোবাসতো।”
এই ভাবে মুড়ি খেতে আর আড্ডা মারতে রাট সাড়ে দশটা বেজে গেলো। দরজায় টোকা পড়তে সবাই তাকিয়ে দেখে দেখে বৌটি এসে দাঁড়িয়ে। তাপস বললো,
-” বলো বৌদিদি। “
বৌদি বললো,
-“অনেক রাত হয়েছে। তাড়াতড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ুন। বাইরে ঝির ঝির করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।”
যেমন নিঃশব্দে এসেছিলো তেমন নিঃশব্দে চলে গেলো। সত্যি করে োর পাঁচজন কোনো কথা না বলে রাত্রের খাওয়া শেষ করে ওই একটা ঘরেই শুয়ে ঘুমিয়ে পরে। দরজা বন্ধ করে দেয়।

রাত তখন কটা বাজে কে জানে। তবে বেশ রাত; তারওপর ঝুপ ঝুপ করে বৃষ্টি পড়েই যাচ্ছে। হটাৎ খুব চেঁচামেচি। যেন দুজনে মারপিট, লাঠালাঠি, খুন-খুনি হচ্ছে। খুব ভেঙে যায় পঞ্চপাণ্ডবের; উঠে বসে বিছানার ওপর। বললো,
-“কিসের আওয়াজ। এতো গন্ডগোল কেন?”
গোটা ঘরটা অন্ধকার জানালা দিয়ে দেখে বাগানে আবছা আলোয় ৫/৭জন লোক কে কাকে যেন মারছে। কে যেন বলছে,
-“বাঁচাও মেরে ফেললো।”
আবার করা যেন বলছে,
-“ছাড়বি না, একেবারে শেষ করে দে।”
সূর্য,গোরা এরা কি করবে; বুঝতে পারছে না। কাজল বললো,
-“নিশ্চই বাইরে মারপিট হচ্ছে। আরে আলোটা জ্বালা না।”
তাপস বললো,
-“আরে কি করে এল জ্বলবে। দেশলাই নেই। গোরা বললো,
-“মোবাইল! মোবাইল কোথায়?”
সবাই পকেট হাতড়ায়। কাজল বললো,
-” এই তো আমার পকেটেই আছে।”
মোবাইলের টর্চের আলো জ্বালালো কাজল, দেখলো দরজা বন্ধই আছে। ওই আলোতে বাকি মোবাইলগুলো খুঁজে সবাই মোবাইলের টর্চের আলো জ্বালালো। দরজার দিকে এগোতেই হটাৎ দরজা খুলে গেলো। সবাই আঁতকে উঠলো। দেখলো দরজার সামনে দাঁড়িয়ে এক বুড়ো লোক। মাথা ফেটে চৌচির;রক্তে বুক ভেসে যাচ্ছে। চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। ভয়ে আঁ আঁ করতে করতে কাজল জ্ঞান হারায়। হটাৎই বুড়ো লোকটা চলে যায়। দরজা দড়াম করে বন্ধ হয়ে যায়। সজল কাজলকে শুইয়ে দিয়ে বাকি চারজন দরজার দিকে এগোয়, এবং হটাৎ আবার দরজা খুলে যায়। সামনে লায়লা। সে বলল,
-“যাবেন না দাদাবাবুরা। আপনাদের ওখানে গিয়ে কাজ নেই।”
সূর্য আর গোরা বলল,
ওখানে যে মারপিট হচ্ছে?”
-“তা আপনারা গিয়ে কি করবেন। বৃষ্টি পড়ছে। ওসব একটু পরেই থিম যাবে। ও গন্ডগোল প্রতি শনিবার হয় আবার থেমেও যায়। “
কথাটা বলেই বসে পরে লায়লা দরজার কাছে।
-” প্রতি শনিবার মানে? বুঝতে পারলাম না। ” তাপস বললো।
-” আপনারা বিছানায় বসুন বলছি।”
লায়লা উঠে গিয়ে ঘরে মোমবাতি জ্বালায়, কিন্তু তাতে আলো ভালো হয় না। তারপর আবার দরজার কাছে এসে বসলো। ঘরটা মোমবাতির অল্প আলোয় যেন ভৌতিক হয়ে উঠেছে। লায়লা আস্তে আস্তে বলতে শুরু করলো,
-“বছর পাঁচেক আগে আমার স্বামী মানে আপনাদের মহেশ কাকার ছেলে শ্যামল গিয়েচিলমিলে দশেক দূরে রাস্তা তৈরির কাজে। আমিও ওখানে কাজ করতাম। ক্রমে আমাদের ভালোপবাস হয়। তারপর কাজ শেষ হতে আমরা বিয়ে করলাম। আমরা মুসলমান। আমার আব্বাজান, ভাইজান মানতে পারলনা। আমরা এখানে পালিয়ে এলাম। সুজন জ্যেঠু এখানেই সব ব্যবস্থা করে দিলেন। উনি বুঝিয়ে সুঝিয়ে মিটমাট করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু হটাৎ উনি লাদাখে গেলেন একটি অফিসার কাজে। তারপর আর মিটমাট হলো না। একদিন এইরকম রাতে আমার আব্বাজান,ভাইজান, আরো কয়েকজন এসে আমার শ্বশুরমশাই  আর আমার স্বামী শ্যামলকে মেরে ফেললো, মাথায় রড মেরে। আমার আব্বাজানকেও আমার স্বামী মাথায় ইট মেরে থেঁতো করে দিয়েছিলো।”
একটু থেমে আবার লায়লা বললো,
-“এতজনকে মেরে ভাইজানের ফাঁসি হয়েছিল।”
কিছুক্ষনথেমে আবার বলতে শুরু করে লায়লা,
-” হটাৎ ওদের কথার মধ্যে চলে গিয়েছিলাম বলে,আমার চাচাতো ভাই আমার গলা টিপে মেরে ফেলে।”
দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে লায়লা বলে,
-“হয়ে গেলো তাও পাঁচ-চায় বছর।”
হটাৎ দমকা হাওয়ায় মাথার ঘোমটা খুলে যায় লায়লার।সবাই দেখলো, গালের কষ বেয়ে রক্তের ধারা, চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে, মুখটা সাদা কাগজের মতন। মনে হচ্ছে যেন সামনে কাউকে দেখলে গিলে ফেলবে। উফঃ মাগো কি বীভৎস সেই মুখ। এই দৃশ্য দেখার পর আর  কারোর কিছু শোনা বা দেখার অবস্থা ছিল না কারোর। সবাই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পরে বিছানায়। চোখে মুখে জলের ছিটে লাগতেই জ্ঞান ফিরে এলো সবার। চোখ মেলে দেখলো সকাল হয়েছে। কয়েকজন অপরিচিত লোক মুখের ওপর ঝুঁকে পরে কি যেন জিজ্ঞাসা করছে। ভয়ে আবার চিৎকার করে ওঠে কাজল,
-“আমরা কিছু করিনি। “

তাপস, সূর্য, আর গোরা ততক্ষনে উঠে বসেছে। সজল শুয়ে শুয়ে দেখছে, এটা  কোথায়? সূর্য গোরা প্রথমে চারিদিকে দেখে। একটা পুরনো ঘর, চারিদিকে মাকড়সার জাল,নোনা ধরা দেওয়াল, ইট বেরিয়ে পড়েছে, জানালা দরজা ভাঙ্গা। ওরা একটা পুরনো খাটে ছেঁড়া করা বিছানায় বসে আছে। ততক্ষণ তাপস ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বলল,-“আপনাকে চেনা চেনা লাগছে।  আপনি কে?”
ভদ্রলোক বললেন,
-“আমি কর্নেল সুজন বোসের ম্যানেজার। আমি তোমায় চিনি তুমি তো তাপস। সুজন বাবুর ভাগ্না। ছোটবেলায় তোমায় দেখেছি। আমার নাম….”
তাপস বলে ওঠে,
-“আমার মনে পড়েছে শশধর ঘোষ।”
ভদ্রলোক হেসে বললেন,
-“ঠিক বলেছ। চলো তাড়াতাড়ি করে সব বাইরে। তোমার মা এসেছেন।
-” মা?কাকিমা?”-সবাই সমস্বরে বলে ওঠে।
-“এখানে না। উনি লোকালিটির মধ্যে ওই সমুদ্রের ধারে সাগরিকা হোটেলে আছেন।”
একটু থেমে বলেন শশধর বাবু অন্য লোকেদের উদ্দেশ্যে,
-“আচ্ছা ভাই অনেক ধন্যবাদ, খুব উপকার করলে এবার তোমরা আসতে পারো।”
বাকি লোক গুলো চলে যায়। সবাই মিলে গাড়ির কাছে এসে থমকে দাঁড়ায়।  একবার মুনলাইট ভিলাকে দেখে। সাইনবোর্ডটা এক পাশে হেলে পড়েছে,মুনটা উঠে গেছে। আগের রাত্রের ঘটনাগুলো স্বপ্ন মনে হচ্ছে,মাথাটা ভারী হয়ে আছে, শরীরটা ঝিমঝিম করছে। তাপস প্রথমে কথা বলল,
-“মা হঠাৎ এখানে কিভাবে এলো এত সকালে?”
শশধর বাবু গাড়ির দরজা খুলে বললেন,
-“আগে সবাই হোটেলে চলো,ফ্রেশ হও,তারপর তোমার মা নিজেই তোমাদের সব বলবেন।”
সবাই পুতুলের মত চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসে। হোটেলে এসে ফ্রেস হয়ে গরম কফি খেতে খেতে সূর্য বলল,

-“কাকিমা আপনি কি জানতেন এই বাড়ির কথা?”সুষমা দেবী বললেন,
-“তোরা বেরিয়ে যাবার পর আমার মনে হল সুজনদাকে একটা ফোন করে খবর নিই। তোরা তার বাগান বাড়িতে গেলি। একটু খবর নিই। এই ভেবে আমি ফোন করলাম। কিন্তু ফোনটা ধরেন শশধর দা।”
কথাটা বলে সুষমা তাকান শশধর বাবুর দিকে। শশধর বাবু তখন কফি খেতে খেতে বললেন,
সুষমা দেবী যখন সুজনদার খবর জিজ্ঞাসা করলেন, আর এটাও বললেন যে  তোমরা আবার নাকি তার কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে এখানে এসেছো,তখন আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।”
-“কেন?” গোরা বলল।
-‘সুজন মামা আমাদের মহেশ কাকার ফোন নম্বর দিলেন,আমাদের ঠিকানা দিলেন মুনলাইট ভিলার।
তাপস বলল,
-“মহেশ কাকাকে ফোন করেছিলাম আমরা যাচ্ছি বলে। তিনি উত্তরও দিয়েছিলেন।”
শশধর বাবু আবার বললেন,
-“তোমরা সুজন বাবুর বাড়ি গিয়েছিলে প্রথমে? আমার ছেলে বেরিয়ে কি বলল?”
-“তিনি নেই। তিন চার দিন আগে চলে গেছেন। “বলল তাপস।
শশধর বাবু বেশ গম্ভীর মুখে বললেন,
-“হ্যাঁ তিন চার দিন আগে চলে গেছেন মানে; তিন চার দিন আগে তিনি মারা গেছেন।”
-“অ্যাঁ।”
আঁতকে উঠলো সবাই। ভয় কাজল জড়োসড়ো হয়ে যায়।
-“আশ্চর্য আমরা একসাথে গাছ তলায় বসে কত কথা বললাম অথচ একটুও বুঝতে পারিনি। তবে আমরা যখন উঠে চলে আসছিলাম তখন আমি একবার পেছন ঘুরে দেখলাম কিন্তু তখন আর কাউকে দেখতে পেলাম না। আমি খুব আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম; তবে অন্য কিছু মনে আসেনি।”বলল সূর্য।
সুষমা দেবী তখন বললেন,
-“ফোনে যখন শুনলাম তিনি নেই! আর তার কথায় তোরা ওখানে গেছিস। তখন খুব ভয় হল। তাই শশধর বাবুকে তোদের কথা বললাম। “
শশধর বাবু বললেন,
-“সুজন বাবুর সাথে ২৫ বছর কাজ করেছি। আমার বয়স ৫০ পেরিয়ে গেল। ওনার খুঁটিনাটি সব খবর জানি। এই মুন লাইট ভিলার কান্ডও জানি। তাই আমি একাই বেরিয়েছিলাম তোমাদের বেরোনোর ঘন্টা তিনেক পরে; তোমার মায়ের মুখে তোমাদের আসার কথা শুনে। কিন্তু তোমার মা জেদ ধরলেন উনিও আসবেন। তাছাড়া তোমার বাবার খবর জানতাম না, তাই আর আপত্তি করলাম না।” বললেন শশধর বাবু তাপস কে উদ্দেশ্য করে।
গোরা,তাপস, সূর্য, সজল চার জনই শশধর বাবুর হাত ধরে বলল,
-“আচ্ছা মামা, আজ থেকে আপনাকেও মামা বলছি। এই মুনলাইট ভিলার,মহেশ কাকার গল্পটা, যা আমাদেরকে লায়লা বলেছিল; তা কি সত্যি?”
শশধর বাবু ওদের হাতের উপর হাত রেখে বলেন,
-“সত্যি ওই ঘটনা ঘটেছিল। আমরা যখন খবর পেয়েছিলাম তখন সব শেষ।”
একটু থেমে শশধর বাবু বলেন,
“আর এটা আর একটা সত্যি কথা শুনবে?”
-“কি?কি?” বলল সবাই।
-” সুজন বাবু ভারী সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। বিবাহ করেন নি। তবে ছোটদের বড় ভালবাসতেন। এই মুনলাইট ভিলা বিক্রি করে, এই বিক্রির টাকাটা তাপসকে দিতে বলেছিলেন। তার নিজের বাড়িটা আমার ছেলেকে দিয়েছেন। তাপস কে দেখার ইচ্ছা হয়েছিল বোধহয়; তাই শেষবারের মতো ওকে দেখা দিয়েছিলেন; তার সাথে তোমাদেরকেও।”
বলে থামলেন শশধর বাবু। সুষমদেবীও আঁচলটা চোখে চেপে ধরে চোখের জল মুছলেন।

Audio Story Starts From Here:

Story InfoName
WriterKaberi Ghosh
Intro & EndingPriyanka Dutta
KathakAkash Debnath
CharactersName
তাপসSuman Sadhukhan
সূর্যDebanshu Ghosh
সজলJoydeep Lahiri
গোরাSoumik Benarjee
কাজলSurajit mukherjee
সুষমা দেবী ও লায়লাOlivia Das
সুজন বোস ও হাবু দাSouradip Roy
শশধর ঘোষ ও মহেশ কাকাAkash Debnath
শিশু শিল্পীSohom Sadhukhan

Find us on Facebook – click here

আরো পড়ুন

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
1
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *